স্টাফ রিপোর্টার :
তীব্র পানির সঙ্কটে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। নিত্য ব্যবহার্য পানি পাচ্ছে না তারা। পাম্প বিকল থাকায় গত ৬ দিন যাবৎ মানবেতর জীবন-যাপন করছে ওয়ার্ড দুটির দুই হাজারেও অধিক পরিবার। এদিকে নাসিক ১১ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডেও দীর্ঘদিন যাবৎ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
গতকাল বেলা ১১টায় শহরের দেওভোগ আখড়া এলাকায় একটি গভীর নলকূপের পানি সংগ্রহ জন্য সড়কে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। স্থানীয়রা জানায়, গত ৬ দিন যাবৎ নাসিকের সাপ্লাই পানি বন্ধ। তাই পানের জন্য সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে স্থানীয় নলকূপের সামনে জড়ো হয়েছেন তারা। সঙ্কট থাকায় প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে ২ঘন্টা পানি দেয়া হয় ওই নলকুপ থেকে। তবে এর জন্য দীর্ঘক্ষণ লাইনে অপেক্ষা করতে হয় তাদের।
স্থানীয় গৃহিণী আফসানা মাহমুদ বলেন, নাসিকের সাপ্লাই পানি দিয়েই আমাদের খাওয়া, রান্না, গোসলসহ সকল কাজ করতে হয়। গত ৬ দিন যাবৎ পানি সাপ্লাই বন্ধ থাকায় কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। কি কারণে পানি বন্ধ সেটাও জানি না। পার্শ্ববর্তী নলকূপ থেকে দীর্ঘ লাইন ধরে পানি সংগ্রহ করে রান্না ও খাওয়া গেলেও অন্য কিছুই করা যাচ্ছে না।
দুপুরে নগর ভবনে পানি সংকটের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে আসেন শহরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা দিনার মাহমুদ। তিনি বলেন, গত ৬দিন পানি পাচ্ছি না। এই সঙ্কটের কারণে ঠিক মতো দৈনন্দিনের স্বাভাবিক কাজ ব্যহত হচ্ছে। সৌচাগারে ব্যবহারের মত পানি নেই। তাই নগর ভবনে এসে সৌচাগার ব্যবহার করেছি।
নাসিক ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ্বাস বলেন, দেওভোগ পানির ট্যাঙ্কের পাম্পটি বিকল হয়ে যাওয়ায় কিছু এলাকায় পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর ও নাসিক কর্মকর্তারা পাম্পটি ঠিক করেছেন কিন্তু এর পরপরই ক্যাবল জ্বলে যায়। এ বিষয়ে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে নাসিক ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির বলেন, পাম্প বিকল হহওয়ায় সাময়িক অসুবিধা হয়েছে। তবে পাম্পটি ঠিক করা হয়েছে খুব শীগ্রই সবাই পানি পাবেন।
পাঠানটুলি এলাকার বাসিন্দা শামীমা আক্তার বলেন, দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ঠিক মত পানি পাচ্ছি না। ভোর ৪ টার সময় এক থেকে দেড় ঘণ্টার জন্য পানি থাকে। এরপর সারাদিন পানি থাকে না। কোনোদিন যদি পানি সংগ্রহ করে রাখতে না পারি তাহলে সারাদিন খুব কষ্টে দিন কাটে।
নাসিক পানি সরবরাহ বিভাগের সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর শীতকালে শহরের পানির স্তর কিছুটা নেমে আসে। পানির স্তর নেমে আসায় পাম্পগুলো পর্যাপ্ত পানি না পেয়ে বিকল হয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে প্রকৌশলী মুরাদ হাসান ভূইয়ার বরাতে নাসিক পানি সরবরাহ বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর ফাহিম চৌধুরী বলেন, প্রতিবছরই পানির স্তর নেমে যাওয়ায় এমন হয়ে থাকে। এ কারণে কয়েক মাস যাবৎ পাঠানটুলিতে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাভাবিক সময় ওই পাম্পে ২৫ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করা হয়। পানি স্বল্পতার কারণে এখন মাত্র এক হাজার লিটার পানিই উত্তোলন করা সম্ভব হচ্ছে।
শীতকালিন সময় পানির সংকট বিষয়ে আজ নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।